খেলাফত শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে সন্ত্রাস দূর্নীতি লুটপাট ও অভাব দূর হবে। আমীরে মজলিস
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবীবুর রহমান বলেছেন, ইসলামী শাসন ব্যবস্থা হচ্ছে খেলাফত শাসন ব্যবস্থা। তাই একটি মুসলিম দেশে একজন খলিফার শাসন ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরী। রাসুল সা. ওফাতের পরপর হযরত আবু বকর সিদ্দিক রা. কে খলিফা নির্বাচিত করা হয়েছিলো মদীনায় শাসন কাজ পরিচলনা করার জন্য। একটি মুসলিম দেশে শাসকের চরিত্র হতে হবে চার খলিফার নমুনায়।
তিনি বলেন, সন্ত্রাস নির্মুল করতে হলে দেশে দেশে চলমান ইসলামী আন্দোলন গুলোকে মেনে নিতে হবে। ইসলামের বিরুদ্ধে চক্রান্ত বন্ধ করতে হবে।
খেলাফত শ্বাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হলে সন্ত্রাস দুর্নীতি, লুটপাট ও অভাব দূর হবে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সুতরাং দেশে খেলাফত প্রতিষ্ঠার জন্য খেলাফত মজলিসের নেতা কর্মী এবং প্রত্যেক মুসলমানকে প্রত্যয় নিতে হবে।
গতকাল (২৬.১২.১৪) বিকেলে ডিডিএস মিলনায়তনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাধারণ পরিষদের ৫ম অধিবেশনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। অধিবেশন উদ্বোধন করেন বেফাকের সিনিয়র সহসভাপি শায়খুল হাদীস আল্লামা আশরাফ আলী। মেহমান হিসাবে উপস্থীত ছিলেন জামেয়া মুহাম্মদীয়া প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল কালাম, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ন মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত স্বেচ্চাসেবক আন্দোলনের আমীর মাওলানা হাবীবুল্লা মিয়াজী, ইসলামী আন্দোলনের,কেন্দ্রীয়নেতা আতাউর রহমান আরীফি সহ অন্যান্যরা। অধিবেশনে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র নায়েবে আমীর শায়খুল হাদীস মাওলানা নেজাম উদ্দী, নায়েবে আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফ,হাফেজ মাহমুদূল হক, মালানা ইসমাউল নূরপুরী,মাওলান খোরশেদ আলম কাসেমী মাওলানা আফজালুর রহমান,মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, যুগ্নমহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক,সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা জালালুদ্দিন আহমদ,মাওলানা রেজাউল করীম জালালী,মওলানা কোরবান আলী,বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন,প্রশিক্ষন সম্পাদক মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা ফয়েজ আহমদ, সমাজ কল্যান সম্পাদক মাওলান মাহবুবুল হক, নির্বাহী সদস্য মাওলানা আবদুল আজীজ, মাওলানা রফিকুর রহমান, ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা এনামুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এনামুল মুছা, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ হারুনুর রহমান সহ কেন্দ্রীয় মহনগর ও জেলা পর্যায়ের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। অধিবেশনে কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষন সম্পাদক মাওলানা আবু সাঈদ নোমান প্রস্তাব পাঠ করেন।
আল্লামা আশরাফ আলী বলেন, দেশে স্বাধীনতার পর অনেকেই ক্ষমতায় এসেছে। গনতন্ত্রের শাসন ব্যবস্থা আমরা দেখেছি। এ সকল সরকার মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে সম্পুর্ন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সুতরাং দেশের মানুষ খেলাফতের শাসন ব্যবস্থা দেখতে চায়। এজন্যে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের প্রত্যেক দায়িত্বশীলকে আল্লাহর জমীনে তার বিধান প্রতিষ্ঠার দাওয়াত পৌছে দিতে হবে। তিনি প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামুলক করার জোর দাবি জানান।
মাওলানা নেজাম উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশের মানুষ চায় সাধারণ মৗলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা। স্বাধীনতা মৗলিক অধিকার। কোরআনের শিক্ষা দেশকে সন্ত্রাস মুক্ত করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনে। খেলাফত প্রতিষ্ঠা ও নাস্তিক মুরতাদদের বিরুদ্ধে আন্দোলন অব্যাহত রাখতে হবে। উল্লেখ্য যে, তিনি বক্তৃতার শেষে মঞ্চে ষ্ট্রোক করেন। তখনি তাকে বার্ডেম হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
মাওলানা ইউসুফ আশরাফ বলেন, স্থায়ী শান্তির দুনিয়া ও আখিরাতের জন্য বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কার্যক্রমকে প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌছে দিতে হবে। মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী লতিফ সিদ্দিকীর ব্যাপারে বলেন, তার নাম আবদুল লতিফ সিদ্দিকী নয়, বরং আবদুল খবীছ জিন্দিগী!
মাওলানা মুফতি মাহফুজুল হক বলেন, আমাদের মাতৃভূমি ৯০% মুসলমান হওয়া সত্ব্ওে নাস্তিকরা আস্ফালনের সুযোগ পায় কোথায়? বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসে টার্গেট করেছে শিক্ষা ব্যবস্থাকে। যেমন বৃটিশরা আমাদের দেশবাসির উপর চালিয়ে দিয়েছিলো। বর্তমান সরকার একজন ধর্মদ্রোহীর নেতৃত্বে শিক্ষা কমিটি গঠন করেছে, সেক্যুলার শিক্ষা ব্যবস্থা প্রনয়ন করতে। এটা কোন ভাবে মুসলমানের শিক্ষা ব্যবস্থা হতে পারেনা। তিনি আরো বলেন, আবদুল লতিফ সিদ্দিকী শুধু একজন নয়, ২০১৩ সালে শাহবাগীরা এমনই করেছিলো। তিনি বলেন, সরকার আবদুল লতিফকে নিয়ে নাটক শুরু করেছে। এ নাটক বন্ধ করুন। মাহফুজুল হক বলেন, রাষ্টীয় ভাবে খেলাফত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা না করতে পারলে এদেশে শোষন মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা হবেনা।
অধিবেশনে গৃহীত প্রস্তাব সমুহ:
আল্লাহ, রাসুল সা. ও ইসলামের বিরুদ্ধে কটুক্তিকারীদের শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান পাশ।
দ্রব্য মুল্যের উর্ধ্বগতিরোধ এবং তেল গ্যাস বিদ্যুতের মুল্য বৃদ্ধির পায়তারা বন্ধ করা।
সংলাপের মাধ্যমে একটি গ্রহণ যোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সমাধান আনা।
আদর্শ মানুষ গড়ার উপযোগী ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয় একটি গনমুখি শিক্ষানীতি প্রনয়ন।
দেশে দেশে ইসলামের বিরুদ্ধে আগ্রাসন জুলুম, হত্যা ও মানবতা বিরুধী অপরাধের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করছি।
আল্লাহ ও রাসুল সা. এর দেখানো শাসন পদ্ধতি তথা খেলাফত প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সকলকে শরীক হওয়ার জন্য উদাত্ব আহ্বান জানাচ্ছি।
আল্লাহ ও রাসুল সা. ও ইসলামের বিরুদ্ধে কটুক্তিকারীদের শাস্তির জন্যে মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাশের দাবিতে নিম্মোক্ত মর্কসুচি ঘোষণা করা হচ্ছে।
এ দাবির পক্ষে জনমত ঘটনার লক্ষে আগামী ১৫ জানুয়ারী থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত দেশব্যাপি সিরাতুন্নবী সা. মাহফিল/অথবা রাসুল সা. এর জীবনী শীর্ষক আলোচনা সভা করা।
এ দাবির পক্ষে সাধারণ জনগনের স্বাক্ষর সংগ্রহ করার লক্ষে গনস্বাক্ষর অভিযান পালন করা হবে আগামী ২০ জানুয়ারি থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত।
আগামী ১৩ মার্চ সারাদেশের প্রতিটি থানায় থানায় মিছিল করা হবে।
আগামী ২৮ মার্চ ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ে ওলামা মাশায়েখ ও দ্বীনদার বুদ্ধিজিবীদের নিয়ে সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে।
সাম্প্রতিক মন্তব্য