ধর্মহীন শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন জাতির মেরুদন্ড ভাঙ্গার এক নাম্বার ষড়যন্ত্র -শায়খুল হাদীস আল্লামা আশরাফ আলী
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস অভিভাবক পরিষদের চেয়ারম্যান ও কওমী মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডের সিনিয়র সহসভাপতি শায়খুল হাদীস আল্লামা আশরাফ আলী বলেছেন- ধর্মহীন শিক্ষনীতি ও শিক্ষা আইন জাতির মেরুদ- ভাঙ্গার এক নাম্বার ষড়যন্ত্র। বর্তমান শিক্ষানীতি, শিক্ষা আইন ও পাঠ্য পুস্তক আগামী প্রজন্মকে ঈমান হারা বানানোর ষড়যন্ত্র। ধর্মপ্রাণ মানুষ বর্তমান শিক্ষা আইন মেনে নিতে পারে না। এটা দেশ ও ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। একজন মানুষকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে হলে তাকে শিক্ষা গ্রহণ করতে হয়। আর প্রকৃত শিক্ষা হল যে শিক্ষার মাধ্যমে আল্লাহমুখী হওয়া যায় এবং আল্লাহকে ভয় করা যায়। সুতরাং সকল মুসলমানদের কর্তব্য তাদের আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে ধর্মহীন শিক্ষানীতি, নৈতিকতা বিবর্জিত শিক্ষা আইন ও হিন্দুত্ববাদের পাঠ্যসূচীর বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা।
আজ বিকেল চার টায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের উদ্যোগে সেক্যুলার শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন বাতিলের দাবীতে উলামা-মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইসমাইল নুরপুরীর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হকের পরিচালনায় সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন জামিআ মুহাম্মদিয়া মুহাম্মদপুর এর প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল কালাম, জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার প্রধান মুফতি মাওলানা হিফজুর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমাদ, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা কোরবান আলী, প্রচার প্রকাশনা ও অফিস সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, জামিআ রাহমানিয়া আরাবিয়ার শিক্ষাসচিব মাওলানা আশরাফুজ্জামান, আশরাফুল মাদারিসিল আরাবিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা ইসমাঈল, মাদরাসাতুল হুদা এর প্রিন্সিপাল মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, বুশরা বিনতে রাজিয়া সুলতানা মাদরাসার মুহাদ্দিস মাওলানা মুহসিনুল হাসান, বায়তুল ফালাহ মাদরাসার মুহাদ্দিস মুফতি শাহাদাত হোসাইন, জামিয়া মোহাম্মাদিয়ার নায়েবে মুহতামিম, মাওলানা ফয়সাল আহমাদ, আল ইসলাহ উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা সুলাইমান, ঘাটারচর মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা যয়নুল আবেদীন, জামিয়া রাহমানিয়ার শিক্ষক মাওলানা কামরুল হাসান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নির্বাহী সদস্য হাফেজ শহীদুর রহমান, ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা প্রমূখ ।
আল্লামা আশরাফ আলী আরো বলেছেন, এই শিক্ষা নীতি শিক্ষা আইন বাস্তবায়ন হলে দেশে তাসলিমা নাসরিন ও আহমাদ শরিফের মতো নাস্তিক তৈরি হবে। ১৯৭১ সালে পতাকার পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু ইংরেজ প্রবর্তীত শিক্ষাব্যবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি। বামপন্থী শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন বিভাগে নাস্তিকদের বসিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থার বেহাল দশা করা হচ্ছে। এরা সাম্রাজ্যবাদীদের এজেন্ট বাস্তবায়নে হিন্দুত্ববাদী ও নাস্তিক্যবাদী ধর্মহীন সিলেবাস প্রণয়ন করে দেশকে ইসলাম ও মুসলমান শূন্য করতে চায়। তাদের এ স্বপ্ন পূরণ করতে দেওয়া যাবে না। উলামায়ে কেরামদের ঐক্যবদ্ধভাবে ময়দানে নামতে হবে। তাহলেই সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা ইসমাইল নুরপূরী বলেছেন, প্রতিটি মসজিদের মিম্বর থেকে বর্তমান শিক্ষা আইন ও সিলেবাসের বিষয়বস্তু জণগনকে অবগত করতে হবে। শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন বাস্তবায়ন হলে মুসলিম ঘরের সন্তান হিন্দু ও নাস্তিকে পরিণত হবে। সুতরাং এই আইনের বিরুদ্ধে শুধূ আলেম-উলামারা কথা বললে ও আন্দোলন করলে চলবে না বরং এটা সকল মুসলমানের দায়িত্ব।
মাওলানা আবুল কালাম বলেছেন, এদেশের মুসলমানরা ভেসে আসেনি। নাস্তিকদের যা মনে চাবে তারা তা করে যাবে। তা হবে না। প্রয়োজনে বুকের তাজা রক্ত দিতে প্রস্তুত তবুও ধর্মহীন শিক্ষানীতি ও শিক্ষা আইন বাস্তবায়ন হতে দেওয়া যাবে না। সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিম দেশে প্রতিটি শিক্ষা কারিকুলামে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
মাওলানা কাসেমী বলেছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি একজন মুসলমান। আপনার সরকারের সুযোগে সরকারকে বেকায়দায় পালানোর জন্য নাস্তিকরা বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছে। তাদের বিভিন্ন অপকর্ম বন্ধ না করলে দেশে ভয়াবহ বিপর্যয় ও আল্লাহর গযব নেমে আসবে। তা থেকে কেউই রক্ষা পাবে না।
মাওলানা মাহফুজুল হক বলেছেন, অবিলম্বে স্কুল-কলেজের পাঠ্য পুস্তক থেকে ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদ ও হিন্দুত্ববাদের বিষয়গুলো বাদ দিয়ে তদস্থলে বৃহত্তম মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় চিন্তা ও আদর্শের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ ইসলামী ভাবধারা এবং মুসলিম ইতিহাস-ঐতিহ্যের প্রতি উদ্দীপনামূলক রচনা, গল্প ও কবিতা বহালের দাবী করেন।
সাম্প্রতিক মন্তব্য